১৯ শে জুলাই, ২০২৫ আমার, আপনার জীবনে কোনো স্মরণীয় দিন নাই হতে পারে তবুও দিনটা স্মরণে থাকবে অনেক দিন, অনেকের কাছে , অন্তত যারা যারা সেদিন উপস্থিত ছিলেন স্কুলের চারতলায় লাইব্রেরী হলে।

কি হয়েছিল সেইদিন? ঋতুচক্রের পরিবর্তনের মতো নিয়ম করে প্রতি বছর ফিরে ফিরে আসে না কি সেই দিন? আসে হয়তো, পুরোনো স্মৃতি ধুয়ে একমুঠো তাজা কামিনী ফুলের গন্ধ ছড়িয়ে তো পড়ে প্রতি সন্ধ্যায়। তবে কিসের এই বিশেষত্ব?
 হায়! কিভাবে বোঝানো যাবে ঐ সব ছোট ছোট ছাত্রদের একরাশ প্রত্যয়ী মুখের ঔজ্জ্বল্য যারা নামসার ইন্টারভিউতে জানিয়েছিল আর দুটো টিউশন পেলে অন্য বিষয়গুলোতেও আর একটু ভালো ফল হতে পারে, কিন্তু........অথবা ক্লাস নাইনের যে ছেলেটি জানিয়েছিল IIT FOUNDATION, PHYSICS,  by Pearson  বইটা পেলে সুবিধা হয়। 
কিভাবে বোঝানো যাবে সেই সব অভিভাবকদের মুখে নিশ্চিন্ত হওয়ার প্রসন্নতা, সন্তানের পড়াশোনার দিকে দৃষ্টি রাখছে আরও সতর্ক চোখ। 
কিভাবে শোনাবো প্রধানশিক্ষক মহাশয় সহ অন্যান্য উপস্থিত শিক্ষকদের স্বরে গভীর আস্থার প্রকাশ। 
আর, 'বিজ্ঞান উৎকর্ষ' পুরস্কার নিতে আসা প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানাধিকারী সত্যেন্দ্রনাথ বসু দল ও হোমি জাহাঙ্গীর ভাবা দলের দুই দলপতির আবেগ রুদ্ধ গলায় অভিজ্ঞতার সঞ্চয়ের কাহিনী, কেই বা সঠিক শব্দ চয়নে লিপিবদ্ধ করতে পারে সেইসব তরুণের হৃদস্পন্দন। 

*   *   *   *   *   *   *   *

১৯ শে জুলাই, ২০২৫, এই বছরের ব্যতিক্রমী নামসা বৃত্তি প্রদান করার দিন। সাথে ছিল 'বিজ্ঞান উৎকর্ষ' প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণের আয়োজন। 
বৃত্তির পিছনে দীর্ঘদিন ধরে চর্চা, অনভিজ্ঞ হাতে পরীক্ষা নেওয়ার সার্বিক ব্যবস্থাপনা, নিপুণ মূল্যায়ণ, ছাত্র ও অভিভাবকদের সাথে মুখোমুখি আলোচনা ও সবশেষে নির্বাচন। সবমিলিয়ে ৩৪ জন ছাত্র এবং আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বাড়তে বাড়তে তিন লক্ষ। এরইমধ্যে নতুন পরীক্ষা নিরীক্ষা। সপ্তম শ্রেণীর দশজন ছাত্রের জন্য আগামী চার বছর ধরে আর্থিক সহায়তার আগাম প্রতিশ্রুতি। প্রতিমাসে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে হাজার টাকা। এই নিশ্চয়তা ছাত্রদের আরও ভালোভাবে পড়াশোনার সহায়ক হবে এইটুকু আশা। পাশাপাশি, দীর্ঘদিনের আজীবন সদস্যদের অকৃপণ ভালোবাসা ও তার সাথে সাগরপারের বলিষ্ঠ সহায়তা 
-------- নামসা সৃষ্টির উদ্দেশ্য কে ক্রমশই অর্থবহ করে তুলছে। তবুও বুকের মধ্যে বেজেই চলেছে আরও পথ হাঁটার ডাক। 

*   *   *   *   *    *   *

এ বছরের নামসার কহানিতে নতুন সংযোজন নবম আর দশম শ্রেণীর ১২০ জন ছাত্রের সায়েন্স সিটি ভ্রমণের আয়োজন। ছাত্ররা গত পাঁচ মাস ধরে বুঝেছিল যে এটা শুধু মাত্র আনন্দ ভ্রমণ নয়। বারোজন বিজ্ঞানীর নামে তৈরী বারোটি দলের ছাত্ররা রীতিমতো লেখাপড়া করে জানলো সেই সমস্ত বিজ্ঞানীদের কথা। আর তারপরেই আসল পরীক্ষা। প্রতি দল তৈরী করলো এক একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক মডেল, তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। প্রথম দুটি দল নির্বাচন বড়ো সহজ কাজ ছিল না। দলবদ্ধভাবে কাজ করা আর বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই, এই নতুন অভিজ্ঞতা ছাত্রদের জীবনে বহুদিনের সঞ্চয় হয়ে থাকবে। ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সম্মীলিত দাবি সামনের বছরে আবার হোক ---- নামসার কাজ বাড়ালো। 

সবমিলিয়ে ১৯ শে জুলাই জমজমাট। রিইউনিয়ন এর বন্ধুদের আকর্ষণ নেই, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপভোগের হাতছানি নেই, রক্তদানের কর্তব্য পালনের আহ্বান নেই তবুও '৬৮ থেকে '২৪ এতো সংখ্যক সদস্য নিরুচ্চার অঙ্গীকার নিয়ে উপস্থিত ছিলেন সেই এক পরম বিস্ময়।

*   *   *   *   *    *   *

Click to See Memories